যশোর থেকে সাদ্দাম মির্জা | যশোর চৌগাছা উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের ১০৪ জন গ্রাম পুলিশের ২৮ মাসের থানা হাজিরার টাকা বকেয়া রয়েছে। আর্থিক অনটনে দিন কাটছে তাদের।
জানা যায়, প্রতি সপ্তাহের সোমবার উপজেলার সকল ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশদের থানা পুলিশ প্রশাসনের নিকট হাজিরা দিতে হয়। এদিন থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করে থাকেন।
কোন গ্রাম পুলিশ যেন হাজিরায় অনুপস্থিত না থাকে সেকারনে তাদের বেতনের একটা অংশ এই হাজিরার সাথে সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে।
বর্তমানে প্রতিদিন হাজিরার জন্য তাদেরকে তিনশ টাকা করে প্রদান করা হয়ে থাকে। উপজেলা প্রশাসন ভুমি উন্নয়ন কর থেকে আয়ের ১% হারে যে টাকা পেয়ে থাকে সেখান থেকে গ্রাম পুলিশদের এই হাজিরার টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু এই টাকা দিয়ে অনেক কিছু করা হলেও ২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে গ্রাম পুলিশদের হাজিরার টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রাম পুলিশ জানান, মাসে কমপক্ষে চার দিন হাজিরা হলে একজন গ্রাম পুলিশের মাসে পাওনা হয় ১ হাজার দুই’শ টাকা। যে মাসে ৫ দিন সোমবার হয় সে মাসে পাওনা হয় ১ হাজার পাঁচ’শ টাকা। প্রতিমাসে কমপক্ষে ১২০০/- টাকা পাওনা হলে ২৮ মাস হিসেবে একজন গ্রাম পুলিশের সর্বনিম্ন পাওনা হয় ৩৩ হাজার ৬’শ টাকা। সেই হিসেবে উপজেলার ১০৪ জন গ্রাম পুলিশের ২৮ মাসের সর্বনিম্ন বকেয়া বেতনের পরিমান কমপক্ষে ৩৫ লাখ টাকা।
গ্রাম পুলিশ ও কর্মচারী ইউনিয়নের যশোর জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ও চৌগাছা উপজেলা শাখার সভাপতি রিজাউল ইসলাম বলেন উপজেলা পরিষদের ১% এর টাকা দিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও আমরা দরিদ্র মানুষ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সরকারি দায়িত্ব পালন করি অথচ আমাদের হাজিরার টাকা বকেয়া রাখা হয়।
তিনি আরো বলেন, আমরা সারাদিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করি আবার রাতে থানা পুলিশের সাথে কাজ করি, এছাড়া উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন নির্দেশনাও আমাদেরকে পালন করতে হয় তারপরও আমাদের বেতন বকেয়া রাখা হয় যা খুবই দু:খজনক।
নাম প্রকাশ না করে একজন গ্রাম পুলিশ বলেন, মাসে বেতন পাই যৎসামান্য। তারপরও বাকি থাকে। উপজেলা পরিষদের কারো বেতন বাকি থাকেনা অথচ আমাদের বছরের পর বছর বেতন বাকি থাকে। আমাদের দিয়ে সবাই কাজ করিয়ে নেন। কিন্তু চেয়ারম্যান স্যার, ওসি স্যার, ইউএনও স্যার, ইঞ্জিনিয়ার স্যার কেউ আমাদের খবর রাখেন না।আমরা ছাড়া আর কারও বেতনও বকেয়া থাকে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ১% থেকে বেতন প্রদান কমিটির উপজেলা সদস্য সচিব ও চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বলেন, কত বাকি আছে তা আমি জানিনা। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
জানতে চাইলে চৌগাছার নবাগত ইউএনও প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আজই খোঁজ নিয়ে দেখছি।
Comment here