
খুলনা প্রতিনিধি।। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি ও যুবদলের ৪ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। শনিবার (২২ ফেব্র“য়ারি) রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন বিএনপি নেতা আবদুল করিম মোলা, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন, ইব্রাহিম হাওলাদার ও বিএনপি’র সর্মথক শফিকুল। খুলনা মহানগর বিএনপি’র এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করে গ্রেফতারের নিন্দা জানানো হয়েছে।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খানজাহান আলী থানার এস এস রিকাবুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের দিন ৫ জনকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছিল সেনা সদস্যরা। তাদের প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। শুক্রবার তাদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্র“য়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান লিটন বাদি হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ৪/৫শ’ জনকে আসামি করে ১৯ ফেব্র“য়ারি মামলা করেন।
মহানগর বিএনপি’র নিন্দা : কুয়েটের মামলায় বিএনপি ও অঙ্গ দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে খুলনা মহানগর বিএনপি বলেছে, ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন ও ছবি, ভিডিও ফুটেজ পাওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে দেশবাসী জানতে পেরেছে, খুলনা প্রযুক্তি ও প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটে যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে তার সূত্রপাত গুপ্ত একটি ছাত্র সংগঠন ঘটিয়েছে।ঘটনার সূত্রপাত রাহুল জাবেদ, ইফাজ ও ইউসুফ নামের তিনজন ছাত্রদল সমর্থকের ওপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে সূত্রপাত ঘটিয়েছে। সেই ঘটনায় কুয়েট কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামা ৫ শতাধিক আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছেন। ইতোমধ্যে গুপ্ত ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলায় মারাত্মক আহত খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা আব্দুল করিম মোলা, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন, ইব্রাহিম হাওলাদার ও বিএনপি’র সমর্থক শফিকুলকে গ্রেফতার দেখিয়ে অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে প্রেরণ করেছে যা রীতিমত নিন্দনীয় ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।গতকাল শনিবার প্রদত্ত আরও বলা হয়, কুয়েটের ভিসি, শিক্ষকবৃন্দ, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মীদের ওপর গুপ্ত সংগঠনের সন্ত্রাসী হামলার হাজারো প্রমাণ থাকা সত্তে¡ও বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের প্রেসক্রিপশনে পুলিশ বিএনপি’র অসুস্থ চারজন নেতা-কর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের পদ অনুসরণ করেছে যা মোটেই সর্মথনযোগ্য নয়। বিশেষ দলের প্রেসক্রিপশনে যে সকল চিকিৎসক, পুলিশ সদস্য এহেন নিন্দনীয় কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিএনপি। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে ভুক্তভোগী সেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে মিছিলটির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কতিপয় মিছিলকারী তাঁদের দিকে অতর্কিতে তেড়ে গিয়ে হামলা করেন। তাঁদের ধাওয়া দিয়ে ও মারধর করে কুয়েট গেটের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং গেটের কাছে একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেই দোকানদারকেও হেনস্তা করা হয়। দোকানদারকে হেনস্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় স্থানীয়রা রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন যার সাথে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। শুধু শিক্ষার্থীদেরই নয় গুপ্ত ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসীরা কুয়েট ভিসি, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছেন। অবিলম্বে ওই সকল গুপ্ত সংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় বিএনপি বিকল্প পদে হাঠতে বাধ্য হবে।বিবৃতিদাতারা হলে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন প্রমুখ।